বিশেষ প্রতিবেদন: Digital Froude: ডিজিটাল জালিয়াতির খপ্পরে সাধারণ মানুষ বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে গত কয়েক বছরে দেশের অর্থব্যবস্থা...
বিশেষ প্রতিবেদন:
Digital Froude:
ডিজিটাল জালিয়াতির খপ্পরে সাধারণ মানুষ
বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে গত কয়েক বছরে দেশের অর্থব্যবস্থায় অনলাইন লেনদেনের দ্রুত প্রসার ঘটেছে। কিন্তু, ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল জালিয়াতি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
একটা সময় নির্জন রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে অস্ত্র দেখিয়ে সবকিছু কেড়ে নেওয়া হত। আজ এটা আর দেখা যায় না। রাতের বেলা অস্ত্র নিয়ে ধনি লোকের বাড়িতে লুটপাট করতে দেখা গেছে। সেটাও আজ আর খুব বেশি খবরে আসে না। তবে শিক্ষা বেড়েছে, প্রযুক্তির উন্নতি হয়েছে। মানুষের ব্যস্ততা বেড়েছে। সেজন্য কম সময়ে সহজে বেশী কাজ করার জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। বেড়েছে অনলাইন লেন দেন। কেন্দ্রের সরকার 'ক্যাস লেস' লেনদেনের উপর জোর দিয়েছে। আর এরই পাশাপাশি শুরু হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জালিয়াতি। মানুষ যখন ডিজিটাল বা অনলাইন প্রযুক্তির সঙ্গে সরগড় হয়ে উঠছে তখন এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে একদল 'ডিজিটাল ডাকাত' বিভিন্ন উপায়ে মানুষের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে, ফাঁকা করে দিচ্ছে ব্যাঙ্কে জমা রাখা টাকা।
হঠাৎ আপনার মোবাইলে ফোন এল আর ওপার থেকে কোন ব্যাঙ্কের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলল, আপনার এটিএম কার্ডটি বন্ধ হয়ে যাবে, এখুনি আপনি আপনার এটিএম-এর পিনকোডটি বলুন এটা আপগ্রেড করে দিচ্ছি। আপগ্রেড করার জন্য আপনার ফোনে ওটিপি যাবে সেটা জানান। ব্যাস দিয়েছেন কি মরেছেন! পুরো একাউন্ট ফাঁকা! যদিও এ পদ্ধতি অনেটা পুরোনো হয়ে গেছে। যেহেতু সময় দ্রুত বদলে যাচ্ছে সেজন্য জালিয়াতির নিত্যনতুন পদ্ধতি সামনে আসছে।
এখন প্রতিনিয়ত আপনার ফোনের মেসেজ বা হোয়াটসঅ্যাপে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন লিঙ্ক শেয়ার হচ্ছে। এখন যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন তাদের অনেকের ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট থাকে। কখনও কোন সাধারণ মেসেজের মাধ্যমে, ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে লিঙ্ক শেয়ার হয়। সবচেয়ে মজার বিষয় এই লিঙ্ক গুলো খুবই আকর্ষণীয় হয়। বেশিরভাগ সময় যৌন উত্তেজক কনটেন্ট অথবা লোভনীয় অফার দিয়ে কোন লিঙ্ক দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষের প্রবৃত্তি এই লিঙ্কে ঢুকতে উৎসাহ যোগায়। ফলে নিমেষে গোটা মোবাইল ক্লোন হয়ে যায় 'ডিজিট্যাল ডাকাত' বা হ্যাকারদের মোবাইলে। ব্যাস গোটা মোবাইলের নিয়ন্ত্রণ তারা নিয়ে অনলাইন লেনদেনের পাসওয়ার্ড পর্যন্ত কপি করে নেয়। তথ্য বলছে আমাদের দেশের ৩০২টি জেলার বাসিন্দা মোট ২৩,০০০ জনের মধ্যে গত তিন বছরে ৪৭% মানুষ আর্থিক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ৪৩% মানুষ ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির মুখে পড়ার অভিযোগ করেছেন, আর ৩৬% বলেছেন ইউপিআই লেনদেনে প্রতারণার কথা।
এখন সরকার সব কিছুর সঙ্গে আধার লিঙ্ক করিয়েছে। সরকারী কোন নথি 'ডিজিটাল ডাকাত' বা 'হ্যাকার'দের হতে পড়ে তবে আরও বড়সড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। দেশকে যখন ডিজিটাল লেনদেনের দিকে ঠেলে দিতে আগ্রহী সরকার, তখন গ্রাহকের স্বার্থরক্ষার দায়িত্বটিও বর্তায় তার উপরেই।
তবে শুধু সরকারের উপর নির্ভর করে কী হবে? নিরাপদ থাকার সত্যিই কী কোন পথ আছে? এটা একটা লাখ টাকার প্রশ্ন। তবে অবশ্যই সতর্ক থাকতে তো মানা নেই! মোবাইলে অজানা কোন উৎস থেকে যতই আকর্ষণীয় লিঙ্ক আসুক না কেন তাতে প্রবেশ করতে যাবেন না। বিভিন্ন মেসেজের মাধ্যমে যদি কোন অফারের লিঙ্ক আসে সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। ফেসবুকে অনেক সময় বিভিন্ন পেজের মাধ্যমে লিঙ্ক শেয়ার করা হয়। যতই লোভনীয় হোক লিঙ্কে প্রবেশের আগে কোথায় ঢুকছেন সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
COMMENTS