News Brief: অসাম অসামে 'সংবিধান লঙ্ঘনের চূড়ান্ত নিদর্শন' চলছে: মালিক মোতাসিম খানের অসামে ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের...
News Brief: অসাম
অসামে 'সংবিধান লঙ্ঘনের চূড়ান্ত নিদর্শন' চলছে: মালিক মোতাসিম খানের
অসামে ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের দাবি জামাআতে ইসলামী হিন্দ-এর মসজিদ-মক্তব ধ্বংস, হাজার হাজার পরিবার গৃহহীন—“সংবিধান লঙ্ঘনের চূড়ান্ত নিদর্শন” বলে মন্তব্য মালিক মোতাসিম খানের
কলকাতা, ১৭ জুলাই: অসমে চলমান বুলডোজার অভিযানে ব্যাপক উচ্ছেদ ও মুসলিম বসতিগুলোর ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে জামাআতে ইসলামী হিন্দ। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মালিক মোতাসিম খান এক প্রেস বিবৃতিতে অভিযানের নিন্দা জানিয়ে একে “ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত, সংবিধানবিরোধী ও মানবিকতার পরিপন্থী” বলে মন্তব্য করেন। তিনি অবিলম্বে উচ্ছেদ বন্ধের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণ পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।
মোতাসিম খানের অভিযোগ, “জুন-জুলাই ২০২৫-এর মধ্যে শুধুমাত্র গোলপাড়া জেলাতেই প্রায় ৪০০০টি ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। ধুবড়ি, নলবাড়ি সহ অন্যান্য জেলাগুলিতে মিলে প্রায় ৮০০০টিরও বেশি পরিবার উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” স্থানীয় সমীক্ষার বরাত দিয়ে তিনি জানান, এই অভিযানে কমপক্ষে ২০টি মসজিদ, ৪০টি মক্তব/মাদ্রাসা এবং একাধিক ঈদগাহ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “এই জনগোষ্ঠী বহুবার নদীভাঙন ও প্রশাসনিক উদাসীনতায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এবার তাদের মাথার উপর থেকে শেষ আশ্রয়টুকুও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।” মোতাসিম খান বলেন, বহু পরিবার ৭০–৮০ বছর ধরে ওই এলাকায় বসবাস করে আসছে এবং তাদের বৈধ ভোটার কার্ড, আধার, অন্যান্য নথিপত্র থাকলেও কোনো রকম নোটিশ না দিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
“ধর্মীয় পক্ষপাতিত্বের সুস্পষ্ট প্রমাণ” সংগঠনের দাবি, এই উচ্ছেদ মূলত মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকাগুলিকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে, অথচ অন্য সম্প্রদায়ের একই ধরনের বসতিগুলিকে অক্ষত রাখা হয়েছে, যা ধর্মীয় প্রোফাইলিং ও পক্ষপাতিত্বের ইঙ্গিত দেয়।
প্রেস বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “সরকারি পট্টা জমিতেও বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, যা আইনগত প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি লঙ্ঘন করেছে। কৃষিনির্ভর ভূমিহীনদের সেই জমি বেসরকারি ও শিল্প উদ্যোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনা জনস্বার্থের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।”
জামাআতে ইসলামী হিন্দের ৬ দফা দাবি: জামাআতে ইসলামী হিন্দ উচ্ছেদ-প্রভাবিত মানুষের পক্ষে সরকারের কাছে ছয়টি দাবি তুলে ধরেছে—
১. স্বচ্ছ পর্যালোচনা না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে হবে। ২. জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, ওষুধ, ত্রাণ ও স্যানিটেশনসহ মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণ পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। ৪. অভিযানের বৈধতা ও পক্ষপাতিত্ব নিয়ে স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। ৫. ভাঙা ধর্মীয় স্থাপনাগুলো পুনঃনির্মাণে সহায়তা করতে হবে। ৬. যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া, পূর্ব-নোটিশ ও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
মোতাসিম খান বলেন, “যখন বুলডোজারই প্রশাসনের মুখ হয়ে ওঠে, তখন গণতন্ত্র মার খায়। রাষ্ট্রের দায়িত্ব পুনর্বাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা—not collective punishment।”
COMMENTS