News Brief: এই জেলা পরপারে পাড়ি দিলেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী মাওলানা আব্দুল মাতিন মাওলানা আব্দুল মাতিন সাহেব ছিলেন একজন সাধাসিধে আল্লাহওয়ালা সৎ...
News Brief: এই জেলা
পরপারে পাড়ি দিলেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী মাওলানা আব্দুল মাতিন
মাওলানা আব্দুল মাতিন সাহেব ছিলেন একজন সাধাসিধে আল্লাহওয়ালা সৎ মানুষ। পেশায় ছিলেন একজন দৈনিক পত্রিকার এজেন্ট। অত্যন্ত দারিদ্রতা মধ্যে তিনি তার জীবন পরিচালনা করতেন। বেশ কয়েক বছর তিনি অসুস্থতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন।
নায়ীমুল হক : অপার করুনার আধার আল্লাহতায়ালার সান্নিধ্যে চলে গেলেন উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের বিশিষ্ট সমাজ কর্মী ও আলেমে দ্বীন আব্দুল মাতিন। আজ সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ বসিরহাট বদরতলা হাসপাতালে ইন্তেকাল হয় তাঁর (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।)
আব্দুল মাতিন এর পিতা মাওলানা ফজলুর রহমান গাজী ছিলেন এলাকার বিশিষ্ট একজন আলেম, সুবক্তা ও সমাজকর্মী এবং সুবিখ্যাত মাওলানা বাগের পীর সাহেব আল্লামা রুহুল আমিন সাহেবের ভ্রাতুষ্পুত্র। দীর্ঘকাল বসিরহাট আমিনিয়া মাদ্রাসা হোস্টেলের সুপারিনটেনডেন্ট ছিলেন এবং তাঁর শিক্ষকতায় বহু আলেম ছাত্র আজ দেশ-বিদেশে দ্বীনের কাজে রত আছেন। তাঁর পাঁচ পুত্র ও সাত কন্যার সংসারে আব্দুল মাতিন ছিলেন তৃতীয় সন্তান।
Advertisement
মৃত্যুকালে আব্দুল মাতিন এর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৯। রেখে গেলেন স্ত্রী সহ তিন পুত্র ও এক কন্যা। চিরকাল সমাজে স্রোতের বিপক্ষে থাকা মানুষ ছিলেন তিনি। অসামাজিক যেকোনো কাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেন তিনি। দল-মত এসব বাদ-বিচার তিনি কখনোই করতেন না। সকলেই যখন স্রোতের পক্ষে গা ভাসিয়ে ক্ষুদ্র স্বার্থ আগলাতে ব্যস্ত, এতটুকু ত্যাগ করতে রাজি নন, ঠিক সেই সময়ে সর্বস্ব উজাড় করে কাজ করেছেন সমাজ গঠনের জন্য। পারতপক্ষে কখনো তিনি নিজের স্বার্থের কথা ভাবতেন না, ভাবতেন না নিজের শরীর স্বাস্থ্যের কথাও। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সম্ভ্রান্ত পরিবারের একজন প্রকৃত ‘দায়ী ইলাল্লাহ’ ছিলেন তিনি। শিক্ষিত, আল্লাহওয়ালা ঘরের সন্তান হওয়ার সুবাদে বড় একটা হৃদয়ের অধিকারীও হয়েছিলেন। পড়াশোনা করা রীতিমতো সংস্কৃতিবান একজন আলেম ছিলেন তিনি। কিন্তু এসব কখনো তিনি কাউকে বুঝতে দিতে নারাজ ছিলেন।
সমাজ গঠনের স্বার্থে নিজের অসুবিধেকে কখনো প্রাধান্য দেন নি, পরোয়াও করতেন না তিনি। যে কারো সাথে তিনি একবার মিশেছেন, অথচ তাঁর মধ্যে খোলামেলা, প্রশস্ত একটি বিবেকের সন্ধান পাননি এরকম একজনকেও পাওয়া যাবে না।
ছাত্র-ছাত্রীসহ সমাজের বিভিন্ন মানুষ তাঁর কাছে নানা রকম পরামর্শ ও সাহায্য-সহযোগিতার আবেদন নিয়ে আসতেন। অকৃপণভাবে তাদের সঙ্গ দিতেন তিনি, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন সদা সর্বদা। মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে কাজে লাগাতেন তাঁর ছোট্ট বইয়ের দোকানটি। দিন দিন এতে তাঁর ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে, তবু তিনি এই কাজ কখনো ব্যাহত হতে দেননি। সত্য সঠিক খবর পৌঁছে দিতে নিজে কাঁধে করে দৈনিক কলম, সাপ্তাহিক গতি, সাপ্তাহিক মিজান পত্রিকা সহ বিভিন্ন পুস্তিকা, পত্র-পত্রিকা ও বই পত্র কোথায় না পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।
আজ আর তিনি আমাদের মধ্যে নেই। তাঁর মৃত্যু সংবাদে গোটা রাজ্যের মানুষ ব্যথিত শোকাহত। দোয়ায় হাত উঠিয়েছেন তাঁরা যে যার মতো করে।
হে পরওয়ারদিগারে আলম, তাঁকে বেহেশতের উচ্চস্থানে জায়গা দিন, তাঁর শোক-সন্তপ্ত পরিবারকে সবর দান করুন এবং আমাদেরকেও তাঁর মতো সরল, সাদাসিধে, খুশি মনের, বড় হৃদয়ের মানুষ হওয়ার তৌফিক এনায়েত করুন। আমীন।
সেখ ইবাদুল ইসলামের সংযোজন : আব্দুল মাতিন সাহেব ছিলেন মাটির মানুষ। তাঁর সান্নিধ্যে যারা এসেছেন তারা সবাই তার ভক্ত হয়ে গেছেন। সাপ্তাহিক কলমে কর্মরত থাকার সময় তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়। আমি দেখেছি এই মানুষটি মিল্লাতের স্বার্থে কলম পত্রিকা বিক্রি করতেন এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতেন। সমাজ দেশ এবং মিল্লাতির প্রতি তার ছিল অগাধ ভালোবাসা। এরকম একজন মানুষ পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ায় আমরা সকলেই শোকসন্তপ্ত। শুধু তার আত্মীয়-স্বজন নয় বাংলা এমন একজন মানুষকে হারালো যিনি প্রকৃত অর্থেই সমাজদরদী ছিলেন সমাজের স্বার্থে কাজ করে গেছেন। তথাকথিত মিল্লাত নেতাদের মত দ্বিচারিতা করেননি। তিনি যা বিশ্বাস করতেন তা বলতেন প্রকাশ্যে। তার মৃত্যু আমাদের সমাজ থেকে একজন বিশ্বস্ত মানুষের চলে যাওয়া। মহান আল্লাহ তা’আলা তাকে বেহেস্তের সর্বোচ্চ মাকামে স্থান দিন এই দোয়া করি।
সৌজন্যে: Banglar Janarob
COMMENTS